রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, "মানুষ বলে আমার সম্পদ আমার সম্পদ অথচ তিনটি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সম্পদই শুধু তার। যা খেয়ে শেষ করেছে, যা পরিধান করে নষ্ট করেছে এবং যা দান করে জমা করেছে- তাই শুধু তার। আর অবশিষ্ট সম্পদ সে ছেড়ে যাবে, মানুষ তা নিয়ে যাবে।” (মুসলিম).
দান-ছদকার ফযীলত-
1. দান সম্পদকে বৃদ্ধি করে।
আল্লাহ পাক এরশাদ করেন: "যারা আল্লাহর রাস্তায় সম্পদ ব্যয় করে তার উদাহরণ হচ্ছে সেই বীজের মত যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। আর প্রতিটি শীষে একশতটি করে দানা থাকে। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অতিরিক্ত দান করেন। আল্লাহ সুপ্রশস্ত সুবিজ্ঞ।” (সূরা বাকারা-২৬১)2. দানকারীর জন্য ফেরেশতা দু’আ করে।
আবু হুরায়রা
(রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেছেন, “প্রতিদিন সকালে দু’জন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাদের একজন
দানকারীর জন্য দু’আ করে বল, “হে
আল্লাহ দানকারীর মালে বিনিময় দান কর। (বিনিময় সম্পদ বৃদ্ধি কর)” আর
দ্বিতীয়জন কৃপণের জন্য বদ দু’আ করে বলেন, "হে আল্লাহ কৃপণের মালে ধ্বংস দাও।” (বুখারী ও মুসলিম)
3. দানকারীর দুনিয়া আখিরাতের সকল বিষয় সহজ করে দেয়া হয়।
4. গোপনে দানকারী কিয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের নীচে ছায়া লাভ করবে।
5.দান-ছাদকা গুনাহ মাফ করে ও জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচায়।
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: "খেজুরের একটি অংশ দান করে হলেও তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা কর।” (বুখারী ও মুসলিম). নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “হে কা‘ব বিন উজরা! ছালাত
(আল্লাহর) নৈকট্য দানকারী, ছিয়াম ঢাল স্বরূপ এবং দান-ছাদকা গুনাহ মিটিয়ে
ফেলে যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে ফেলে।” আবু ইয়ালা, সনদ ছহীহ।
6.মানুষ কিয়ামতে দান-ছাদকার ছায়াতলে থাকবে।
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “নিশ্চয় দান-ছাদকা দানকারী থেকে কবরের গরম নিভিয়ে দিবে। আর মু’মিন কিয়ামত দিবসে নিজের ছাদকার ছায়াতলে অবস্থান করবে।” (ত্ববরানী, বাইহাক্বী, সনদ ছহীহ)আরও কিছু আল কোরআন ও সহিহ হাদিসের বাক্য-
@ হে ঈমানদারগণ! তোমরা খোঁটা দিয়ে ও কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান-খায়রাতকে বরবাদ করে দিও না।” (সূরা বকারা- ২৬৪)
@: সালমান বিন আমের (রা:) থেকে বর্ণিত, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “মিসকিনকে দান করলে তা শুধু একটি দান হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু গরীব নিকটাত্মীয়কে দান করলে তাতে দ্বিগুণ ছওয়াব হয়। একটি ছাদকার; অন্যটি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার।” (নাসাঈ, তিরমিযী)
@ নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “"কিয়ামত দিবসে আল্লাহ পাক তিন ব্যক্তির সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণা দায়ক শাস্তি। টাখনুর নীচে ঝুলিয়ে যে কাপড় পরিধান করে, দান করে যে খোঁটা দেয় এবং মিথ্যা শপথ করে যে ব্যবসায়ী পণ্য বিক্রয় করে।” (মুসলিম)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন